রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন

“”ভূতের ধন””

   মোঃ ইয়াসিন আহমেদ রাফি
১ম এবং ২য় অংশে ভূতনাথ,জমিদার বাড়ির পরিচয় এবং গোয়েন্দা মেয়েটি ও চাবিটি সম্পর্কে বলা হয়েছিল।
আজ ৩য় অংশ-
ভূতনাথ খুবই গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছিল চাবিটা।
সে লেখাপড়া তেমন না জানার কারণে বুঝতে পারছে না কী লেখা আছে চাবি টির গায়ে।
ভূতনাথ চাবিটা মেয়েটির হাতে দিয়ে বলল পড়ে শুনাও তো কী লেখা আছে এতে?
মেয়েটি আমতাআমতা করে বলল,
আসলে, ইয়ে মানে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না কী লেখা আছে এখানে।
এটাও বুঝতে পারছি না যে,কোন ভাষায় লেখা।
ভূতনাথ মুচকি হেসে বলল তুমি ও বুঝি লেখাপড়া করতে পারনি?
তখন মেয়েটি বলল আমি লেখাপড়া করেছি লেখাপড়া করব না কেন? এই চাবির গায়ে লেখা ভাষাটা আমি জানিনা।
এর আগে কখনো এই ভাষা দেখেছি বলে ও মনে পড়ে না।
ভূতনাথ হতাশ হয়ে এক ধীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলল,তবে এবার উপায়?
মেয়েটি একটু হেসে বলল,
চিন্তার কিছু নেই উপায় তো একটা আছেই।
ভূতনাথ কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করল কী উপায় গো?
মেয়েটি বলল আমার পরিচিত একজন আছে,
যে এমন পুরোনো অনেক ভাষা নিয়ে গবেষণা করে এবং অনেক ভাষা সম্পর্কে জানে।
সে আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে।
ভূতনাথ বলে উঠল তাকে পাবে কোথায়?
তখন মেয়েটি বলে উঠল তাকে পাওয়া কি মস্ত বড় কোনো কাজ নাকি।
ভূতনাথ কিছু বলে না, সে অবাক হয়ে শুধু শুনছে।
তখন মেয়েটি তার ব্যাগ থেকে মোবাইল বেড় করে এবং চাবির গায়ের লেখাটির কয়েটি স্থিরচিত্র অর্থাৎ ছবি তোলে।
ভূতনাথ কেমন যেন অবাক হয়ে শুধু দেখছেই কারণ সারা গ্রামে তখন মাত্র কয়েকজনের কাছে ই ছবি তোলা যায় এমন ফোন আছে।
এত কাছ থেকে এই মোবাইল ফোন সে কখনোই দেখোনি।
সে ভাবছে এই এত ছোট জিনিসটার ভিতরে কী এমন আছে যে এত কম সময়ে যেকোনো ছবি আঁকতে পারে জিনিসটা।একদম নিখুঁত ভাবে যেমন টা তাদের গ্রামের চিত্রশিল্পি ভোলার আঁকা ছবিকেও হার মানায়।
সে ভাবতে ভাবতেই মেয়েটির ছবি তোলা শেষ।
এবার ছবি পাঠানোর পালা।
মূহুর্তের মধ্যে ই ছবি পাঠিয়ে ও দিল।
এরপর মেয়েটি তার সেই পরিচিত লোকটিকে একটি কল ও দিয়ে দিল এবং লোকটিকে বিস্তারিত সব বলেও দিল।
ভূতনাথ তো অবাক,
সে বলে উঠে,
কী যন্ত্র বানাইলা তুমি,
কিভাবে জানো এত কারিগরি।
মেয়েটি বুঝতে পেরেছিল যে ভূতনাথদের গ্রামের মানুষ এখনও উন্নত জীবনযাপন সম্পর্কে কিছু জানে ও না।
তাইতো ভূতনাথ এত বেশি অবাক হয়ে গেল মোবাইল ফোন দেখে।
মেয়েটি বলে উঠল আপনি চিন্তা করবেন না কিছুক্ষণের মধ্যে ই আমরা এই চাবিতে লেখা ভাষার বাংলা কী হবে তা পেয়ে যাব।
তখন ভূতনাথ বলল, কিন্তু কিভাবে পাব?
তখন মেয়েটি বলল পরে একসময় সব কিছু আপনাকে  শিখিয়ে দিব।
বুঝিয়ে  দিব। এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে চাবিতে লেখা ভাষাটির বাংলা কী হবে তা জানার জন্য।
ভূতনাথ বলল কোনো সমস্যা নেই,
পুকুরের কাছে আমগাছের নিজে বসে আম খেতে খেতে আর প্রকৃতি দেখতে দেখতে কিভাবে সময় যাবে বুঝতে ই পারবে না।
মেয়েটি খুব মন ভরে হেসে বলল
ঠিক আছে তবে তাই করি আমরা।
ভূতনাথ মেয়েটিকে নিয়ে গেল পুকুরের কাছে এবং গাছ থেকে আম পারলো। এবার তারা বসে গল্প করবে বলে ঠিক করলো।
ভূতনাথের সাথে মেয়েটির বেশ ভালোই ভাব হয়ে গেল।
ভূতনাথ মনেমনে খুব খুশি।
  তার কারণ তার সাথে কেউ এভাবে মিশছে কথা বলছে।
তাকে জানতে চাইছে বুঝতে চাইছে।
মেয়েটি বলল আপনি অনেকটাই,
এ কথা বলতে বলতেই ভূতনাথ বলে উঠল আমি তো তোমার থেকে বয়সে ছোট তবে আমাকে তুমি আপনি আপনি করে ডাকছো কেন?
মেয়েটি চোখ বড়বড় করে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
বাহ বেশ বলেছেন তো।
বয়স কত আপনার?
ভূতনাথ বলে উঠল গ্রামের মানুষের মুখে শুনেছি আমার বয়স ১৩ অথবা ১৪।
মেয়েটি বলল তাহলে আপনাকে তুমি বলে ডাকা ই যায়।
তুমি আমাকে কী বলে ডাকবে শুনি?
তখন ভূতনাথ বলল কী বলে ডাকব?
মেয়েটি উওরে বলল আমাকে তুমি প্রিয়াআপু বলে ডাকবে।
ভূতনাথ বলল শুধু আপু ডাকি?
মেয়েটি বেশ খুশি হয়ে বলল, তাহলে তো আর কথা ই নেই।
তুমি আমাকে আপু বলে ই ডাকবে।
তারা গল্প করতে করতে অন্ধকার নেমে আসছে প্রায়।
এমন সময় ভূতনাথের আপুর ফোনে কি যেন একটা আওয়াজ করে উঠল।
ভূতনাথের কাছে এই আওয়াজ টা একদম নতুন তাই সে আত্নরক্ষার জন্য লাফিয়ে উঠল।
তখন মেয়েটি তার ফোনে দেখতে পারল চাবিতে লেখা ভাষাটির বাংলা।
বাংলায় লেখাটি ছিল
        “”শশীর আলোর রশ্মি “”
মেয়েটি এই লাইনটি ভূতনাথকে পড়ে শুনায় এবং বলে শশীর আলোর রশ্মির মানে কি হতে পারে?
শশী মানে তো চাঁদ,
তার মানে চাঁদের আলোর রশ্মি!
কিন্তু
এর মানে কি?
ভূতনাথ বলে উঠে এই জমিদার বাড়ির লাইব্রেরি আছে একটা আর সেখানে একটা বড় আলমারিতে সব সময় চাঁদের আলো এসে পড়ে কিন্তু কিভাবে চার পাশ থেকে চাঁদের আলো এসে এক হয়ে যেন এই আলমারিতেই মিলিত হয় বুঝতে পারি না।
তখন মেয়েটি বলে আমাকে নিয়ে চলো সেখানে।
ভূতনাথ মেয়েটিকে নিয়ে গেল  সেই লাইব্রেরিতে মেয়েটিও অবাক চার পাশে ছোট ছোট নকশা করা। এবার দেখার বিষয় ভূতনাথের কথা ঠিক কী না?…………………..চলবে
((রহস্য কী সেই চাঁদের আলোর রশ্মি গুলো আলমারিতে ইঙ্গিত করার?ভূতনাথ আর মেয়েটি কি পারবে রহস্য সমাধান করতে?))
জানতে সাথেই থাকুন
৪র্থ অংশের জন্য অপেক্ষা করুন।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.